![]() |
টার্ডিগ্রেড, Bigganchinta |
টার্ডিগ্রেড।।।
পৃথিবীর সব ধরনের দুর্যোগ থেকে বেঁচে ফেরার বিশ্বরেকর্ড সম্ভবত এই প্রাণীটির রয়েছে। জানেন কি, শত বিপদ ও প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও পৃথিবীতে টিকে থাকার ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি কোন প্রাণীর?
পৃথিবী ধ্বংস বা সব মানুষ মারা যাবার পরও কি কোন প্রাণী বেঁচে থাকবে? যদি বেঁচে থাকে তাহলে সেই কঠিন প্রাণ প্রাণীটি কি?
যদি তারার বিস্ফোরণ বা গ্রহাণুর আঘাতে মানুষ ধ্বংস হয়ে যায় তবু টার্ডিগ্রেড প্রাণীদের কোন ক্ষতি হবে না। তাই যদি দেখা যায় প্রাণের বিনাশ ঘটছে তবুও একেবারেই প্রাণ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে সেটা ধরে নেয়া যায় না।
এবার কঠিন প্রাণের এই টার্ডিগ্রেড বা ‘জল ভাল্লুক’ সম্পর্কে জানা যাক। ক্ষুদ্রাকৃতির এ প্রাণীটি উচ্চতায় সর্বোচ্চ অর্ধ মিলিমিটার হয়ে থাকে। কোন প্রকার খাবার ও জল ছাড়াই এরা বেঁচে থাকতে পারে ৩০বছর পর্যন্ত। ঘরের শীতল আবহাওয়া কিংবা সর্বোচ্চ ১৫০ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাও এটি সহ্য করতে পারে।
মহাশূণ্যর পরম শূণ্যতা –ভাবুন তো কোন বদ্ধ জায়গায় বা একটু বাতাস কম জায়গায় আমাদের কেমন শ্বাসবন্ধ লাগে। বাতা্স(অক্সিজেন) ছাড়া আমরা বা অন্য প্রাণীরা কিছুক্ষণের মধ্যেই অক্কা। কিন্তু এই ‘টার্ডিগ্রেড’ পরম শূণ্যতায় টিকে থাকতে পারে। মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অনেক প্রানীদের সাথে টার্ডিগ্রেডদেরও মহাকাশে পাঠিয়েছিলেন। মানুষ স্পেসস্যুট ছাড়া মহাশূণ্যে গেলে মারা যাবে। চাপশূণ্যতার জন্য ফুসফুস ফেটে যাবে, সাথে রক্তবাহী নালী। তাছাড়া বিভিন্ন তেজস্ক্রিয়তার কামড় তো আছেই। অথচ ২০০৭ সালে মহাকাশবিজ্ঞানীরা কিছু টার্ডিগ্রেডকে একটা স্যাটেলাইটের পেছনে করে মহাশূণ্যে পাঠিয়েছিলেন। এরা শুধু বেঁচেই ফেরেনি, কিছু কিছু টারডিগ্রেড ছানাপোনাও জন্ম দিয়ে ফেলেছিলো মহাশূণ্যে! পরম শূণ্যতা (absolute vacuum) থেকে ঘুরে এসে ফুল ফ্যামিলি বহাল তবিয়তে ছিলো। কী সাংঘাতিক!
পরম শূণ্যতায় যেমন চাপহীন পরিবেশে এরা বেঁচে থাকতে পারে তেমনি সমুদ্রপৃষ্ঠের ১২০০ গুণ বেশি চাপ সহ্য করতে পারে। কিছু কিছু প্রজাতির টার্ডিগ্রেড সমুদ্রপৃষ্ঠের চেয়ে ৬০০০ গুণ বেশি চাপ বহন করতে পারে। এই চাপ পৃথিবীর গভীরতম সাগর ট্রেঞ্চ, ‘ম্যারিয়ানা ট্রেঞ্চ’ এর ছয়গুণ। ‘’চাপে চিঁড়েচ্যাপ্টা’’ কথাটা এই টার্ডিগ্রেডরা তেমন বলেনা বোঝা যাচ্ছে!
Source: BBC News
0 Comments